৳ ২৯৮ ৳ ২৫৩
|
১৫% ছাড়
|
Quantity |
|
তথ্য সাময়িকী সালতামামি – ২০২৩ অর্ডার করলে সাথে সালতামামি ২০২২ ফ্রি
বাংলাদেশি উপন্যাসের নতুন অভিজ্ঞতা ‘আহাম্মক অহমের গল্প’ আখতার জামান রাশান লেখক লিও তলস্তয়ের ‘রেজারেকশন’ উপন্যাসটি পড়েছিলাম অনেক আগে। সম্প্রতি একটি বাংলাদেশি উপন্যাস পড়তে গিয়ে মনে পড়ল তার কথা। অন্তর্দহন বা অনুশোচনায় জর্জরিত মানবসত্ত্বাকে উপজীব্য করে লেখা উপন্যাস রেজারেকশন। মানুষের ভেতর বাহির, অর্থাৎ তার মনোজগতে সু এবং কু-এর ডাক এর সঙ্গে সমাজ-পরিবার ইত্যাদির বুঝাপড়া রাশিয়ার উপন্যাসে বেশ দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই মনোজগৎ বা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস খুব একটা লেখা হয় না। কেউ কেউ আছেন মনোবিদ, তারা নানা মানসিক সংকটকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনি লেখেন। তবে তারা লেখেন কোনো নির্দিষ্ট চরিত্র বা ঘটনা নিয়ে। একটা সমাধানও পাওয়া যায় সেসব উপন্যাসে। কিন্তু সমাধান নাই কোনো, চরিত্রও সুনির্দিষ্ট নয় বরং একটা সর্বজনীন অবস্থা নিয়ে উপন্যাস পড়ার অভিজ্ঞতা ভিন্ন হওয়ার কথা।
আমার সেই অভিজ্ঞতা হলো ‘আহাম্মক অহমের গল্প’ পড়তে গিয়ে। এ উপন্যাসের লেখক মোহাম্মদ আলী। তার উপন্যাসটি ২০২৩ সালের বইমেলায় আসার কথা রয়েছে।
বই বের হওয়ার আগে উপন্যাস পড়ে ফেলার অনুভূতিও দারুণ। সেই সুযোগ আমাকে যারা করে দিয়েছেন তাদের একটা ধন্যবাদ দিতেই হয়। ধন্যবাদ না দিয়েও পারা যায় না, কারণ উপন্যাসটি সুখপাঠ্য এবং ভাবনা উদ্রেককারী। এ উপন্যাসে কাহিনি আছে। কী হয় কী হয় এরপর-এমন একটা টান টান ভাবও আছে। ঝরঝরে গদ্য, উপভোগ্য সংলাপ মিলিয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা দারুণ।
এখনকার জনপ্রিয় উপন্যাসগুলো সাধারণত প্যাঁচ প্যাঁচে আবেগ, ব্যক্তিগত প্রেম অথবা সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে লেখা। পাঠক যে কেন এ ধরনের লেখা পছন্দ করে তা নিয়ে গবেষণা চলতে পারে। তবে এসব উপন্যাসের অন্যান্য যে গুণ, যেমন গদ্য-সেগুলোও বেশ আড়ষ্ট থাকে দেখেছি। ‘আহাম্মক অহমের গল্প’ মোটেও তেমন নয়। বরং এটি আরো ভিন্ন। উপন্যাস লেখার যে অভ্যস্ততা তা থেকে ভিন্ন। এই উপন্যাসের ‘ফর্ম’ আলাদা। লেখক শুরু থেকেই পাঠকের সঙ্গে বুঝাপড়ায় নেমে যান। কাহিনি বলার মাঝে মাঝেই তিনি এসে হাজির হন। এতে পাঠের মজা নষ্ট হয় না, বরং লেখক নিজেই চরিত্র হয়ে ওঠেন।
যে কোনো বই নিয়ে আলোচনা করতে গেলে পাঠকের আগ্রহ জাগে কাহিনি নিয়ে। তবে আমি তাদের সেই আগ্রহ এখানে মেটাতে চাই না। শুধু এটুকু বলব, একজন সৎ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার একটি পরকীয়া সম্পর্ক এখানে আছে। যৌনতা, মাদক, আমাদের সরকারি অফিস বা প্রজেক্ট কীভাবে চলে, ঘুষ লেনদেন কীভাবে হয়, বর্তমান সময়ের ভার্চুয়াল প্রেম-এসবও আছে। যার পড়বেন তারা এক বসায় যদি শেষ না করতে না পারেন, তাহলে উপন্যাসটি ‘ভার্চুয়ালি’ তার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে-ফিরতে থাকবে।
যেমন কেউ যদি প্রেমে পড়েন তাহলে কী হয়। প্রেমের অনুভূতি প্রিয় মানুষটি সঙ্গে না থাকলেও ঘুর ঘুর করে। এ উপন্যাসও ঘুর ঘুর করবে। আর যদি সেই প্রেম হয় গোপন, সমাজ মেনে নেবে না এমন, পরিবারে জানানো যায় না কিছুতে-তখন? তখন এক দুই ধারি তলোয়ারের মতো দুদিক থেকে কাটতে থাকে সে প্রেম। একদিকে সুখ অপরদিকে ঘৃণা। কথা হলো এই সুখ না ঘৃণা-কে জয়ী হয় মানুষের জীবনে? কেউ আসলে স্থায়ীভাবে জয়ী হয় না।
লেখকের ভাষায় পরিস্থিতিটা এমন, ‘যাদের তাস খেলার অভিজ্ঞতা আছে, শুধু অভিজ্ঞতা নয়, যারা তাস খেলার কারণে বাসায় ফিরে বকা খেয়েছে, তারা জানে, খেলার কি নেশা। যারা তাস খেলে বকা খায়নি বা অনুতাপে ভোগেনি তাদের তাস খেলার নেশাও হয়নি কখনো । নেশা জিনিসটাই এই। একদিকে ভোগ বা মজা আর অন্যদিকে অনুতাপ বা শান্তি। এই বিপরীত দুই মেরু যেখানে আছে সেখানে নেশা হবেই। নিরীহ কাগজের তৈরি তাসও যে নেশার বস্তু হয়ে উঠে তা এই ভোগ আর অনুতাপের সংঘর্ষের কারণে। একই কারণে নেশার বস্তু হয়ে উঠে সিগারেট, গাঁজা, মদ, জুয়া, সমেহন, যৌনতা প্রভৃতি।’
এ ভোগ আর অনুতাপ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটিতে আরো প্রবল। যা কিছু কিছু ঘটনায় পাঠকের কাছে আরো স্পষ্ট হবে। অর্থাৎ ভার্চুয়াল দুনিয়ায় কেউ সেক্স করে ফেলছে, ভাবছে তারা তো আর সত্যি সত্যি করছে না কাজটা, সমাজ-সংসার ঠিকই থেকে যাচ্ছে। আসলে কী তাই? এভাবে করতে করতে তা যখন অভ্যাস বা নেশায় পরিণত হয় তখন?
এ প্রশ্ন থাকুক পাঠকের জন্য। আরেকটা প্রশ্ন করা যাক। কেন এমন পরিস্থিতি হয়?
Title | : | আহাম্মক অহমের গল্প |
Author | : | মোহাম্মদ আলী |
Publisher | : | দাঁড়িকমা প্রকাশনী |
Edition | : | 1st Edition, 2023 |
Number of Pages | : | 136 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
If you found any incorrect information please report us